গণ অভ্যুথানের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অতিথি হিসেবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণ অভ্যুথানের চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া শেখ হাসিনাকে যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন সুপরিচিত যোগ ব্যায়াম প্রশিক্ষক এবং প্রচারক। তিনি প্রতিদিন সকালে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন নেতাকেও এই প্রাচীন পদ্ধতির সুফল সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছেন। সূত্র জানায়, হাসিনা যখন গণ অভ্যুথানের পর প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছিলেন, তখন মোদি তার হাতে একমাত্র সমাধান হিসেবে যোগ ব্যায়ামে নিয়মিত হবার পরামর্শ দেন।
মোদি বলেন, “গণ অভ্যুথানের কারণে চাপ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু যোগ ব্যায়াম করলে সমস্ত মানসিক চাপ দূর হয়ে যাবে। আমি যোগ ব্যায়াম করেই ভারতের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, আপনিও পারবেন।”
ভারতের গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা গেছে, শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লিতে মোদির একান্ত তত্ত্বাবধানে নিয়মিত যোগ ব্যায়ামের সেশন নিচ্ছেন। প্রত্যেকদিন সকালে দিল্লির এক গোপনীয় স্থানে তাদের এই সেশন অনুষ্ঠিত হয়। মোদি নিজে ব্যক্তিগতভাবে হাসিনাকে যোগব্যায়ামের বিভিন্ন আসন শিখাচ্ছেন—বিশেষ করে ‘শবাসনা’ এবং ‘প্রণায়াম’।
শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি শেখ হাসিনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ এর মাধ্যমে তিনি গণ অভ্যুথানের চাপ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের মতে, “যোগ ব্যায়াম শেখার পর থেকে শেখ হাসিনা অনেক শান্ত এবং চিন্তামুক্ত বোধ করছেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনৈতিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যোগ ব্যায়াম শেখার বিষয়ে শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া মিশ্র। প্রথমদিকে, তিনি এতে খুব আগ্রহী না থাকলেও মোদির উৎসাহে শেষ পর্যন্ত রাজি হন। তিনি বোন শেখ রেহানাকে বলেন, “গণ অভ্যুথানের মাধ্যমে জনগণ আমাকে ফেলে দিল, এখন যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে পড়ে যাবার ভয় কাটাতে চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মোদি আমাকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ শিখিয়েছেন, যাতে আমি দেশবাসীর প্রতিক্রিয়া দেখে শান্ত থাকতে পারি। এখন আর চিৎকার ও দাবী শুনলেই রাগ হয় না। তবে সুদখোর ইউনূসের নাম শুনলে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে, তখন শবাসন করি। ’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার যোগ ব্যায়াম শেখার খবর আলোচিত হচ্ছে। কিছু মিডিয়া এটিকে ভারতের ‘সফট পাওয়ার’ কৌশল হিসেবে দেখছে। “ভারত শুধু রাজনৈতিক সহায়তা নয়, মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্যও নেতৃত্ব দিচ্ছে। যোগ ব্যায়াম শেখানোর মাধ্যমে মোদি দেখিয়ে দিচ্ছেন, ভারত প্রতিবেশীদের কেবল আশ্রয়ই দেয় না, মানসিক শান্তিও দেয়,” বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সাংবাদিক শ্রি সুশান্ত মালহোত্রা।
কংগ্রেস নেতা রাজীব গান্ধী কটাক্ষ করে বলেছেন, “আঞ্চলিক নেতাদের ব্যায়াম শেখানো মোদির নতুন এক রাজনৈতিক কৌশলে পরিণত হয়ে উঠছে। হয়তো ভবিষ্যতে গণ অভ্যুথানের মুখে থাকা আরও অনেক নেতার জন্য মোদিকে এই সেশন চালু রাখতে হবে।”
ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর শেখ হাসিনার জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। গণঅভ্যুথান, রাজনীতির ব্যস্ততা, বিরোধীদের চাপ থেকে মুক্তি পেয়ে এখন তিনি প্রতিদিন সকালে দিল্লির প্রাকৃতিক পরিবেশে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি খুঁজে নিতে চেষ্টা করছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার জীবনের এই অধ্যায় তার ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক শক্তি সঞ্চয় করে তিনি হয়তো আবারও বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে প্রবলভাবে ফিরে আসতে পারেন। শেখ হাসিনার এই অভিজ্ঞতা কেবল তার রাজনৈতিক জীবনে নয়, হয়তো বিশ্ব রাজনীতির ক্ষেত্রেও এক নজিরবিহীন ঘটনার প্রতীক হয়ে থাকবে।