বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক প্রথম আলো’র লোগো পরিবর্তন নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে নতুন লোগোর নকশা, যার সত্যতা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
বুধবার (২রা অক্টোবর) ইন্টারন্টে ভিত্তিক সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়া নকশায় দেখা যায়, নতুন লোগোতে ব্যবহার করা হয়েছে ভারতের জাতীয় প্রতীক অশোক চক্র এবং ভারতীয় পতাকার রঙ। এই নকশাটি সামনে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানামুখি বির্তক শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার শাসনামলের শুরুর তিন বছর প্রথম আলো আংশিক নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলেও ২০১৩ সাল থেকে সরাসরি সরকারের পক্ষে অবস্থান নেয়। শেখ হাসিনা সরকার মূলত অগণতান্ত্রিক ওয়ান ইলেভেনের সেনাসমর্থিত সরকারের উত্তরসূরী হিসেবে ক্ষমতায় আসে। ওয়ান ইলেভেনের অন্যতম অংশীদার হিসাবে প্রথম আলো তখন মিডিয়া পার্টনারের দায়িত্ব পালন করেছিল।
দীর্ঘদিন ধরে অনেকে অভিযোগ করে আসছেন যে দৈনিক প্রথম আলো নীতিগতভাবে বাংলাদেশের স্বার্থের তুলনায় ভারতের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়। কৌশলে তারা ভারত সরকারের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
জুলাই বিপ্লবে শেখ হাসিনা গণহত্যা চালিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান। ফলে বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। এই শূন্যতা পূরণে দৈনিক প্রথম আলো এগিয়ে এসেছে বলে দাবি করেছেন ক’জন বিশ্লেষক।
প্রথম আলোর লোগো পরিবর্তনের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাংবাদিক ও প্রখ্যাত লেখক বলেন, “আমাদের নীতি হলো বদলে যাও, বদলে দাও। কিন্তু আমরা নিজেরা বদলাই না, আমরা শুধু বদলে দেই। আমাদের লোগো আমাদের অংশ, তাই বদলানোর প্রশ্নই আসে না। আমরা ঠিক আগের মতোই আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।”
প্রথম আলোর নকশা বিভাগের এক শিল্পী বলেন, “অপপ্রচার চালিয়ে প্রথম আলোর অগ্রযাত্রা বন্ধ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, বাংলায় প্রবাদ আছে ‘চেনা বামুনের পৈতা লাগে না’। আমাদেরও লোগো পরিবর্তন করতে হবে না।”
সচেতন পাঠক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা শুরু থেকেই প্রথম আলোর লোগো পরিবর্তনের বিষয়টিকে ভিত্তিহীন গুজব হিসেবে দেখছেন এবং এটিকে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার হিসেবে বিবেচনা করছেন।