বাংলাদেশের সাবেক সড়ক, জনপদ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বিশ্বব্যাংক।
আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে কাদের পালিয়ে যাওয়ার পর তার বান্ধবীদের আর্থিক লেনদেন এবং সম্পদের উৎস নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠে। বিশ্বব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই সম্পদের উৎস নির্ধারণ এবং কীভাবে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করে অর্জিত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে আগ্রহী।
অভিযোগ রয়েছে ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে দুর্নীতি বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নির্ধারণ, ফটোসেশনে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি আপলোডে বেশি মনোযোগ দিতেন। এসময় তার যত্ম নিতেন একদল বান্ধবী। যৌথ কর্মকাণ্ডের ফাঁকে তিনি ও তার বান্ধবীরা বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের এই তদন্তের লক্ষ্য হচ্ছে, কীভাবে এবং কী কারণে তার বান্ধবীরা এত অল্প সময়ে বিশাল সম্পদের মালিক হলেন, এবং এ প্রক্রিয়ায় কোনো রাষ্ট্রীয় সুবিধা বা প্রটোকল ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা বের করা।
বিশ্বব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, “আমরা জানতে আগ্রহী, কীভাবে এই বিপুল সম্পদ অর্জিত হলো। যদি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করে এই সম্পদ সঞ্চয় করা হয়, তবে সেটি আন্তর্জাতিক নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। বিশ্বব্যাংক এ বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়।”
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কাদেরের অনেক বান্ধবী ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ভারত, সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যারা এখনো পালাতে পারেননি, তারা দেশের ভেতরে স্বেচ্ছাবন্দী হয়ে রয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ওবায়দুল কাদেরের বান্ধবীদের সম্পদের উৎস সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য প্রকাশিত হলে তা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক দুর্নীতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এই তদন্তে নিবিড় নজর রাখছে এবং বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।